পিরিয়ডকালীন স্বাস্থ্যসেবায় অনন্য উদ্যোগ

স্বাস্থ্য চিকিৎসা

স্কুলে ক্লাস চলাকালীন হুট করে পিরিয়ড হয়ে গেলে বেশ ঝামেলায় পড়ত আনিকা (ছদ্মনাম)। শুরু হতো ফিসফিস করে বান্ধবীদের কাছে প্যাড চাওয়া। না থাকলে দৌড়ে ‘স্কুলের খালা’র কাছে যাও, দোকান থেকে আনাও। কতবার যে মনে হয়েছে, ইস্‌! স্কুলের আঙিনার ভেতরেই যদি একটা ভেন্ডিং মেশিন থাকত, যখন-তখন কিনে নেওয়া যেত ন্যাপকিন। কলেজ পেরিয়ে ভার্সিটিতে উঠেও এখনো মাঝে মাঝে একই ঝামেলায় পরে আনিকা। ব্যাগে অতিরিক্ত প্যাড রাখতে ভুলে যায়। এই অস্বস্তির শেষ কোথায়!

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা জায়গায় অনেক নারীকে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটাতে হয় পড়াশোনা অথবা পেশাগত প্রয়োজনে। স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য না হওয়ার কারণে তাঁদের অধিকাংশই দীর্ঘ সময় ন্যাপকিন ব্যবহারের পিরিয়ডজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। এ ছাড়া দেশের অনেক নারী এখনো পিরিয়ডের সময় অপরিচ্ছন্ন কাপড় ব্যবহার করে। বাংলাদেশের অন্যতম স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্র্যান্ড ফ্রিডম-এর উদ্যোগ ‘ফ্রিডম ভেন্ডিং মেশিন’ কয়েক বছর ধরে নারীদের পিরিয়ড স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে।

ফ্রিডম-এর উদ্যোগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে স্থাপন করা হয় দেশের প্রথম স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। প্রাথমিকভাবে ১০টি ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ১৫ হাজার নারী শিক্ষার্থীর জন্য সাশ্রয়ী স্যানিটারি ন্যাপকিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা হয়। বর্তমানে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ধাপে ধাপে ফ্রিডম ভেন্ডিং মেশিন ছড়িয়ে পড়ছে দেশের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এর মাধ্যমে ৩৫ লাখেরও বেশি নারী পাচ্ছেন সহজে যেকোনো সময় সাশ্রয়ী স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার সুবিধা।