জাতীয় সম্মেলনকে সমর্থন জানালো চারজন নির্দল বিধায়ক: জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল ওমর আবদুল্লাহর দল

জাতীয় সম্মেলনকে সমর্থন জানালো চারজন নির্দল বিধায়ক: জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল ওমর আবদুল্লাহর দল

রাজনীতি

সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বড় দল হিসেবে উঠে আসা জাতীয় সম্মেলন (এনসি) আরও শক্তিশালী হলো যখন সাতজন নির্দল বিধায়কের মধ্যে চারজন বৃহস্পতিবার দলের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। এর ফলে জাতীয় সম্মেলনের বিধায়কদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬-এ, যা ৯০-সদস্যের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার সমান।

ওমর আবদুল্লাহ, এনসি দলের সহ-সভাপতি এবং সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী, ঘোষণা করেন যে দলের নবনির্বাচিত বিধায়কদের দ্বারা তাকে ‘এককভাবে’ এনসি বিধানসভা দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর ফলে এনসি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে এবং সরকার গঠনের জন্য তাদের আর কোনো প্রাক-নির্বাচনী মিত্র, যেমন কংগ্রেসের সমর্থন প্রয়োজন হবে না।

চারজন নির্দল বিধায়ক ও তাদের আসন

এনসি দলকে সমর্থন করা চারজন নির্দল বিধায়ক হলেন প্যারে লাল শর্মা, সতীশ শর্মা, চৌধুরী মোহাম্মদ আক্রম এবং ডঃ রমেশ্বর সিংহ। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তারা যথাক্রমে ইন্দেরওয়াল, ছাম্ব, সুরানকোট এবং বাণি আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে তারা যথাক্রমে ৬৪৩, ৬৯২৯, ৮৮৫১, এবং ২০৪৮ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন।

এই চারজন নির্দল বিধায়ক এনসি দলের শক্তিবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। এর আগে এনসি দল ৪২টি আসন জিতে বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল আরও চারটি আসন। নির্দল বিধায়কদের এই সমর্থন তাদের সেই প্রয়োজন পূরণ করেছে এবং এখন দলটি সরকার গঠনের পথে।

বিধানসভার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি

জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন দীর্ঘ দিন পর অনুষ্ঠিত হয়, কারণ ২০১৯ সালে রাজ্যটির বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে তাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই জম্মু ও কাশ্মীর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এই নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করেছে যে এনসি এখনও রাজনীতির ময়দানে শক্তিশালী এবং জনগণের মধ্যে তাদের প্রভাব এখনো বিদ্যমান।

বিধানসভায় এনসি দলের বর্তমান সংখ্যা ৪৬ হওয়ায় ওমর আবদুল্লাহর দল এখন নির্দ্বিধায় সরকার গঠন করতে পারে। এনসি দলের প্রধান, ওমরের বাবা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ, দলের প্রতি জনসমর্থনের এই পুনঃস্থাপনকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

এনসি দলের মিত্র কংগ্রেসের ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠলেও, এই সমর্থন পাওয়ার পর তাদের এখন কংগ্রেসের সাহায্য প্রয়োজন হবে না। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে এনসি দলের সম্পর্ক এবং তাদের ভূমিকা কেমন হবে তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু এই মুহূর্তে, এনসি দল তাদের নিজের ক্ষমতায় সরকার গঠনের পথে এগোচ্ছে।

এছাড়াও, পড়ুন : গ্লোবাল মেথাইলামাইনস (মনোমেথাইলামাইন, ডাইমেথাইলামাইন, ট্রাইমেথাইলামাইন) বাজারের আকার 2023 সালে USD 1.60 বিলিয়ন ছিল, এই প্রতিবেদনটি বাজারের বৃদ্ধি, প্রবণতা, সুযোগ এবং পূর্বাভাস 2024-2030 কভার করে

জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পরে এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সময় রাজ্যটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হয়েছিল – জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। এই পরিবর্তন জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল, এবং এনসি দল এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছিল। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেখা গেল যে জনগণ পুনরায় তাদের প্রতি আস্থা রেখেছে এবং তাদের সরকার গঠনের সুযোগ দিয়েছে।

জাতীয় সম্মেলন দলের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং তাদের জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই সম্ভবত এই নির্বাচনে তাদের জয়লাভের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে রাজনৈতিক মহলে এই নির্বাচন এবং সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে নানা আলোচনা এবং অনুমান চলতে থাকবে।

এখন, জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণ নতুন সরকার থেকে কী আশা করে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। এনসি দলের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে, এটি কেমনভাবে রাজ্যের জনগণের স্বার্থে কাজ করবে, তা রাজনৈতিক মহলে বিশেষ মনোযোগের বিষয় হবে।