প্রধানমন্ত্রী মোদীর বারাণসী সফরে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের প্রতি তীব্র আক্রমণ

প্রধানমন্ত্রী মোদীর বারাণসী সফরে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের প্রতি তীব্র আক্রমণ

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার বারাণসীতে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী অভিযোগ করেন যে, এই দুই দল তাদের বংশানুক্রমিক রাজনীতির কারণে দেশের যুবসমাজকে উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। তাঁর মতে, পরিবারতন্ত্রের কারণে দেশের যুবসমাজ সঠিক সুযোগ পাচ্ছে না, যা একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, “দেশ পরিবারতন্ত্রের একটি বড় হুমকির মুখে রয়েছে। তারা কখনোই যুবসমাজকে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবে না। সেই কারণেই আমি লালকেল্লা থেকে এক লাখ এমন যুবকদের রাজনীতিতে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি, যাদের পরিবারের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।” প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই বক্তব্য পিটিআই-এর মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বারাণসীতে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং তিনি দাবি করেন যে, পূর্ববর্তী সরকারগুলো বারাণসীকে অবহেলা করেছে এবং শহরের উন্নয়নে কোনো সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি। সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে মোদী বলেন, “এসপি কিংবা কংগ্রেস, কারোর কাছেই বারাণসীর উন্নয়ন কখনোই অগ্রাধিকার পায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না। বিজেপি সরকার ‘সবার উন্নয়ন’ (সবকা বিকাশ) নীতিতে বিশ্বাসী।”

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যগুলির পেছনে রয়েছে বারাণসী শহরের গত কয়েক বছরে উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি। মোদীর দাবি, বিজেপি সরকারের অধীনে বারাণসীর সর্বাঙ্গীন উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে, যা পূর্ববর্তী দলগুলোর শাসনামলে অবহেলিত ছিল। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা, যেমন নতুন সড়ক নির্মাণ, জলবাহী প্রকল্প এবং পর্যটন উন্নয়ন। মোদী বলেন, “বারাণসীকে আগে যারা শাসন করেছে, তারা শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করেছে। কিন্তু বিজেপি সরকার বারাণসীকে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে দেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।”

উত্তরপ্রদেশের যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “যারা রাজনীতির সঙ্গে কখনো জড়িত ছিল না, সেই সমস্ত ‘অরাজনৈতিক’ যুবকদের রাজনীতিতে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে তারা বংশানুক্রমিক রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।” মোদী যুবসমাজকে আগামীর নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তুলতে চান এবং তাঁর মতে, পরিবারের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক না থাকলেও রাজনৈতিক নেতৃত্বে আসার সুযোগ থাকা উচিত।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে পরিবারের শাসন তথা ‘পরিবারতন্ত্রের’ সমালোচনা। তিনি বলেন, “পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি শুধুমাত্র তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষা করে, দেশের যুবসমাজের উন্নয়নে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।” মোদীর এই সমালোচনা মূলত কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির বিরুদ্ধে নির্দেশিত ছিল। তাঁর মতে, এই দলগুলোর রাজনীতি বংশানুক্রমিকভাবে পরিচালিত হয় এবং এর ফলে দেশের যোগ্য যুব সমাজ রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।

এছাড়াও, পড়ুন : গ্লোবাল লিনিয়ার ভেরিয়েবল ডিসপ্লেসমেন্ট ট্রান্সডুসার বাজারের আকার 2023 সালে USD 1.30 বিলিয়ন ছিল, এই প্রতিবেদনটি বাজারের বৃদ্ধি, প্রবণতা, সুযোগ এবং পূর্বাভাস 2024-2030 কভার করে


এদিকে বারাণসী সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন এবং এই প্রসঙ্গে তার বক্তব্য ছিল যে, বিজেপি সরকার শুধুমাত্র বারাণসী নয়, গোটা দেশের সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বাসী। মোদী বারাণসীর উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন, সেখানে নির্মাণাধীন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কথা। বারাণসী নগরী বর্তমানে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র এবং এর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী বরাবরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এসেছেন যে, এই দলগুলো শুধুমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করেছে, যার ফলে রাজ্যের প্রকৃত উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে, বারাণসী তথা গোটা উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে বিজেপি সরকারের সময় যে কাজ হয়েছে, তা অতীতে কোনো সরকার করেনি। বারাণসীর ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় গুরুত্বকে সামনে রেখে মোদী দাবি করেন যে, বর্তমান সরকার শহরের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে ব্যাপক উন্নয়ন করতে বদ্ধপরিকর।

এদিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী বারাণসী শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথোপকথনে অংশ নেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে আগামী প্রজন্মের জন্য রাজনীতি ও নেতৃত্বের নতুন সম্ভাবনা তৈরির কথা।