বিজেপি, আরএসএস ভারত জুড়ে ঘৃণা ও হিংসা ছড়াচ্ছে: রাহুল গান্ধী পূঁছ জেলার জনসভায়

বিজেপি, আরএসএস ভারত জুড়ে ঘৃণা ও হিংসা ছড়াচ্ছে: রাহুল গান্ধী পূঁছ জেলার জনসভায়

রাজনীতি

জম্মু ও কাশ্মীরের পূঁছ জেলায় সোমবার একটি জনসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী বিজেপি এবং এর আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) -কে ভারত জুড়ে ঘৃণা ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, বিজেপি যেখানে যায়, সেখানে জাতি, ধর্ম, রাজ্য এবং ভাষার মধ্যে বিভাজন তৈরি করে এবং সংঘর্ষ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে।

রাহুল গান্ধী পূঁছ জেলার এই সমাবেশে বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি পাহাড়ি এবং গুজ্জর সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চেয়েছে এবং তাদের এই প্রকল্প ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, “যারা ঘৃণা ছড়ায়, তারা কখনোই সফল হতে পারে না। ঘৃণা শুধুমাত্র ভালোবাসা দিয়েই কাটানো যায়। একদিকে ঘৃণা ছড়ানোর মানুষ রয়েছে এবং অন্যদিকে রয়েছে ভালোবাসার দোকান খোলার মানুষ।”

গান্ধীর এই বক্তব্য তাঁর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অংশ হিসেবে সামনে এসেছে। এই যাত্রায় তিনি বারবার দেশে ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কংগ্রেস সকলকে একত্রিত করে এগিয়ে যাবে এবং প্রত্যেককে তাদের অধিকার দেবে। আমাদের কাছে সবাই সমান, কাউকে পেছনে ফেলে রাখা হবে না।”

বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

রাহুল গান্ধী আরও দাবি করেন, বিজেপি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিশেষত পাহাড়ি এবং গুজ্জরদের মধ্যে বিভাজনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বিজেপির এই প্রকল্প ব্যর্থ হবে। মানুষ তাদের উদ্দেশ্য বুঝতে পারছে।” তাঁর মতে, বিজেপি এবং আরএসএসের মূল লক্ষ্যই হলো সামাজিক ঐক্য ভাঙা এবং সংঘাত উসকে দেওয়া।

তিনি বলেন, “বিজেপি এবং আরএসএস সবসময় ঘৃণা এবং বিভাজনের রাজনীতি করে। তারা সমাজের মধ্যে ফাটল তৈরি করতে চায়, যাতে মানুষের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। তবে কংগ্রেস এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এবং দেশের মানুষের জন্য ভালোবাসা এবং সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আসবে।”

মানুষের জন্য কণ্ঠস্বর

এই জনসভায় রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “আমি মানুষের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত। যেসব কাজ মানুষ চায়, আমি তা সংসদে তুলে ধরতে প্রস্তুত। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের যা কিছু সমস্যা, তা সমাধানের জন্য আমি লড়াই করব।” গান্ধীর এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের জন্য গভীরভাবে সচেতন এবং তাঁদের সমস্যাগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।

তিনি আরও বলেন, “যে কোনো প্রয়োজন বা চাহিদা থাকুক না কেন, আমি সংসদে তুলে ধরব। আপনারা আমাকে নির্দেশ দিন, আমি সেই অনুযায়ী কাজ করব। জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের কণ্ঠস্বর হওয়া আমার দায়িত্ব।”

এছাড়াও, পড়ুন :সার্কুলার এবং ব্যান্ড স ব্লেড মার্কেট – গ্লোবাল মার্কেট ইনসাইটস এবং সেলস ট্রেন্ডস 2024 থেকে 2031

ভালোবাসার বার্তা

রাহুল গান্ধীর ভাষণ জুড়ে ছিল ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তা। তিনি বলেন, “ঘৃণার রাজনীতি কখনোই সফল হতে পারে না। কংগ্রেস সবসময় ভালোবাসা এবং ঐক্যের পক্ষে দাঁড়াবে। আমরা দেশের প্রত্যেক মানুষের জন্য লড়াই করব। আমাদের লক্ষ্য সকলকে একসাথে নিয়ে চলা এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।”

গান্ধীর এই ভাষণে কংগ্রেসের ঐতিহ্যগত মূল্যবোধের প্রকাশ ছিল। তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, কংগ্রেস কখনোই ঘৃণা এবং বিভাজনের রাজনীতিকে সমর্থন করবে না। তিনি বলেন, “কংগ্রেস সবসময় মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করবে। আমরা কোনো মানুষকে পেছনে ফেলে রাখব না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাব।”

জনসমর্থন এবং রাজনৈতিক বার্তা

গান্ধীর বক্তব্য তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এবং কৌশলের প্রকাশ ছিল। তিনি জনসমর্থন পাওয়ার জন্য বারবার বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন এবং কংগ্রেসের মূলনীতি হিসেবে ভালোবাসা, সম্প্রীতি এবং মানুষের অধিকার রক্ষার কথা তুলে ধরেছেন। এই ভাষণের মাধ্যমে তিনি কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবন ঘটানোর চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরের মতো অঞ্চলে, যেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান।

গান্ধীর বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে বিজেপি এবং আরএসএসের রাজনীতির বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করে যাবেন এবং দেশের মানুষের জন্য কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

উপসংহার

এই জনসভায় রাহুল গান্ধীর বক্তব্য ছিল একদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা এবং অন্যদিকে দেশের মানুষের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির প্রকাশ। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিশেষত পাহাড়ি এবং গুজ্জর সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের প্রসঙ্গে গান্ধীর মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কংগ্রেসের ঐক্য এবং ভালোবাসার বার্তা তুলে ধরেছেন এবং বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার সংকল্প প্রকাশ করেছেন।