বিজেপি-র অভিযোগ: তেজস্বী যাদব ‘সরকারি বাংলো থেকে লুটপাট করেছেন’, ‘সোফা, লাইট, এসি গায়েব’

বিজেপি-র অভিযোগ: তেজস্বী যাদব ‘সরকারি বাংলো থেকে লুটপাট করেছেন’, ‘সোফা, লাইট, এসি গায়েব’

রাজনীতি

বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে সরকারি বাংলো থেকে আসবাবপত্র এবং বৈদ্যুতিক সামগ্রী চুরি করার অভিযোগ এনেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সরকারি বাংলোটি খালি করার সময় তেজস্বী যাদব নাকি সোফা, লাইট, এসি সহ আরও বিভিন্ন সামগ্রী সরিয়ে নিয়েছেন।

বিজেপি-র বিহার মিডিয়া ইন-চার্জ দানিশ ইকবাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তেজস্বী যাদবের দ্বারা খালি করা সরকারি বাংলোটি থেকে আসবাবপত্র, এসি, লাইট এমনকি ব্যাডমিন্টন কোর্টের ম্যাট পর্যন্ত উধাও হয়ে গেছে। বাড়ির বেসিক স্ট্রাকচারের অংশগুলি পর্যন্ত তুলে নেওয়া হয়েছে।”

সরকারি সম্পত্তির লুটপাট: বিজেপি-র গুরুতর অভিযোগ
দানিশ ইকবাল আরও বলেন, “তেজস্বী যাদব যখন সরকারি বাংলো ছেড়ে যান, তিনি শয্যা থেকে শুরু করে সমস্ত বৈদ্যুতিক সামগ্রী, এসি ইউনিট, লাইট এবং এমনকি বাথরুমের জলের আউটলেটও সরিয়ে নিয়েছেন। ব্যাডমিন্টন কোর্টের ম্যাট এবং ফোয়ারা পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা পরিষ্কার যে তেজস্বী যাদব যখন বাড়ি খালি করলেন, তিনি সবকিছুই নিয়ে গেলেন।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এটা শুধু অভিযোগ নয়, এটা পুরোপুরি প্রমাণিত। যেভাবে তেজস্বী যাদব তার সরকারি বাসভবন খালি করেছেন, তা তার মানসিকতা এবং সংস্কারের প্রতিফলন ঘটায়। এ ধরনের আচরণ সরকারী সম্পত্তি লুটপাটের সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত।”

  এছাড়াও, পড়ুন : ব্যাপক শিল্প গ্যাস চাপ জাহাজ বাজার রিপোর্ট


তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে দলীয় তরফে বিষোদ্গার
বিজেপি নেতা দানিশ ইকবাল এর অভিযোগ অনুযায়ী, “এই ঘটনাটি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার সাধারণ প্রস্থান নয়, বরং সরকারী সম্পত্তি লুটের এক বিপজ্জনক উদাহরণ। আমরা কোনও মিথ্যা অভিযোগ করছি না, বরং সমস্ত প্রমাণ সহ এই ঘটনা তুলে ধরছি। তেজস্বী যাদব নিজের বাসভবন খালি করার পর, পুরো বাংলোর অবস্থা দেখে স্পষ্ট যে তিনি সরকারি সম্পত্তির সঙ্গে ঠিকভাবে আচরণ করেননি।”

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বাংলোর মধ্যে থাকা সরকারি মালপত্রের ক্ষতি এবং চুরির বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা উচিত। তারা দাবি করেছে যে এ ধরনের আচরণ একজন নেতার কাছ থেকে একেবারেই প্রত্যাশিত নয়, বিশেষ করে যিনি রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন।

তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে জনরোষ
বিজেপি নেতা দানিশ ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, “তেজস্বী যাদবের এই আচরণ তার রাজনৈতিক চরিত্র এবং মূল্যবোধের প্রতিফলন। তিনি শুধুমাত্র সরকারী সম্পত্তি লুট করেননি, বরং জনগণের বিশ্বাসেরও অবমাননা করেছেন। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং নেতা হিসাবে, এ ধরনের আচরণ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

এ ধরনের ঘটনা নিয়ে তেজস্বী যাদব কিংবা তার দলের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই অভিযোগগুলি সামনে আসার পর রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিজেদের মতামত জানাতে শুরু করেছেন।

বিজেপি-র পক্ষ থেকে তদন্তের দাবি
বিজেপি-র পক্ষ থেকে তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে সরকারী সম্পত্তির লুটের তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। তারা বলছে, “সরকারি সম্পত্তি কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, তা জনগণের। তেজস্বী যাদবের এই কাজ জনগণের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে। এ বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

বিজেপি নেতা আরও বলেন, “আমরা চাই সরকার এই বিষয়ে উপযুক্ত তদন্ত করে। কোনও রাজনৈতিক নেতা এ ধরনের কাজ করতে পারেন না। এটা শুধু একজন ব্যক্তি নয়, সরকারের সম্পত্তি এবং জনগণের অর্থের অপব্যবহার।”

তেজস্বী যাদবের নীরবতা
তেজস্বী যাদব বা তার দল এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রদান করেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা তেজস্বী যাদবের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হতে পারে। সরকারি সম্পত্তি চুরি বা ক্ষতিসাধনের অভিযোগ একজন নেতার জন্য অত্যন্ত গুরুতর এবং এটি তার ভাবমূর্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিরোধীদের কটাক্ষ
বিজেপি-র এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য বিরোধী দলও নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকেই বলছেন, তেজস্বী যাদবের এ ধরনের কাজ তার রাজনৈতিক চরিত্রের দুর্বলতা প্রকাশ করে এবং এটি বিহারের জনগণের জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।

বিহারের রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছিল, আর এই ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠেছে।