হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর ভোটগ্রহণ আজ শুরু হয়েছে। প্রায় ২ কোটি ভোটার ৯০টি বিধানসভা আসনের জন্য এক দফায় তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে হরিয়ানার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নায়ব সিং সাইনি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা, কুস্তিগির এবং রাজনীতিবিদ ভিনেশ ফোগাট, জেজেপি নেতা দুষ্যন্ত চৌতালা সহ ১০২৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য পরীক্ষা হবে।
খট্টর ভোট প্রদান করে আগাম ভোট দেওয়ার আহ্বান জানালেন
কর্ণাল থেকে ভোট প্রদান করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। ভোটের পরে তিনি ভোটারদের প্রতি আগাম ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ভোট প্রদান একটি দায়িত্ব, এবং যারা কর্মরত আছেন বা অন্যান্য দায়িত্বে ব্যস্ত আছেন তাদের উচিত সকালেই ভোট প্রদান করা।” কর্ণাল থেকে ভোট প্রদান করা খট্টর ভোটারদের ভোটের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে বলেন।
দীপেন্দর হুডার অভিযোগ— বিজেপিকে সমর্থন করছেন ভিওয়ানি এসপি
কংগ্রেস নেতা দীপেন্দর সিং হুডা ভিওয়ানি জেলার পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে মডেল কোড অব কনডাক্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে এসপি প্রকাশ্যভাবে বিজেপি প্রার্থী জেপি দলালের পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছেন এবং ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এই বিষয়টি তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেছেন এবং অবিলম্বে এসপির বদলি দাবি করেছেন।
কংগ্রেস বনাম বিজেপি: দশ বছরের ব্যবধানে হরিয়ানায় ক্ষমতার লড়াই
বর্তমান সরকার তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যেখানে কংগ্রেস দশ বছরের বিরতির পর আবারও ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে চায়। ২০১৪ সাল থেকে বিজেপি হরিয়ানায় ক্ষমতায় আছে এবং মুখ্যমন্ত্রী নায়ব সিং সাইনি পুনর্নির্বাচনের লড়াইয়ে আছেন। এই নির্বাচনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরা হচ্ছে, যিনি কংগ্রেসের মুখ হিসেবে উপস্থিত আছেন।
দুষ্যন্ত চৌতালার জেজেপি এবং অন্যান্য দলগুলির ভূমিকা
দুষ্যন্ত চৌতালার জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি) হরিয়ানার রাজনীতিতে একটি তৃতীয় শক্তি হিসেবে কাজ করছে। জেজেপি গত নির্বাচনেও কিছু আসনে সফলতা অর্জন করেছিল এবং তাদের ভোট ব্যাংক এইবার আরও বড়ো হতে পারে। এ ছাড়াও বিভিন্ন আঞ্চলিক দল এবং নির্দল প্রার্থীরাও এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, যারা ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
ভোটারদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি
নির্বাচন কমিশন হরিয়ানায় একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তারা ইভিএম এবং ভোটের সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে ইতিমধ্যেই তাদের নির্ধারিত বুথে পৌঁছে গেছেন। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রয়েছে, বিশেষত সংবেদনশীল এলাকায়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভোটের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে শান্তিপূর্ণ হবে এবং কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এছাড়াও, পড়ুন : অ্যারোস্পেস কোটিং মার্কেট শেয়ার বিশ্লেষণ, 2030 পর্যন্ত পূর্বাভাস
ভোটারদের উত্সাহ: ভোর থেকেই ভোট কেন্দ্রে ভিড়
হরিয়ানার বিভিন্ন অঞ্চলে ভোটের দিনের ভোর থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক ভোটার আগেই ভোট কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে ভোট দেওয়ার প্রতি বিশেষ উত্সাহ দেখা গেছে। ভোটাররা বলছেন যে তারা একটি কার্যকর সরকার চায়, যা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে সক্ষম হবে।
প্রচারণার শেষ দিনে বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ
প্রচারণার শেষ দিনে কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে উত্তপ্ত আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলেছিল। ভূপিন্দর সিং হুডা এবং নায়ব সিং সাইনি বিভিন্ন জনসভায় অংশ নিয়েছেন এবং ভোটারদের সমর্থন চাইতে তাদের দলীয় নীতির কথা তুলে ধরেছেন। বিজেপি যেখানে উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতার কথা বলছে, কংগ্রেস সেখানে বেকারত্ব, কৃষক আন্দোলন এবং বিদ্যমান সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ভোটারদের কাছে আবেদন জানাচ্ছে।
ভোট শেষে হরিয়ানার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ
আজকের ভোটের পরে প্রায় দুই সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। হরিয়ানার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই নির্বাচনের উপর, যেখানে প্রায় ১০২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
4o