ভাদোদারা, গুজরাট থেকে এক অভূতপূর্ব ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে একজন স্থানীয় বন্যপ্রাণী উদ্ধারকর্মী, যশ তাদভি, একজন প্রায় মৃত সাপকে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে বাঁচিয়েছেন। এই ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং বন্যপ্রাণী উদ্ধার অভিযানের প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন বৃদ্ধি পায়।
ঘটনার বিবরণ:
গত ১৮ অক্টোবর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে ভাদোদারার একটি এলাকায় যশ তাদভি একটি জরুরি কল পান। ফোনে জানানো হয় যে, একটি চেকার্ড কিলব্যাক সাপ সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদভি দেখেন, প্রায় এক ফুট লম্বা এই সাপটি কোনো রকম নড়াচড়া করছে না এবং নিঃসাড় পড়ে আছে।
যদিও সাপটি সম্পূর্ণ অচেতন ছিল, তাদভি তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর বিশ্বাস রেখে বলেন, “সাপটির কোনো সাড়া ছিল না, তবে আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে, এটিকে বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।”
সিপিআর প্রদানের সময়কার অভিজ্ঞতা:
প্রথমবার এমন একটি ঘটনায় তাদভি সরাসরি সিপিআর করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি সাপটির গলা সাবধানে ধরে তার মুখ খুলে বায়ু দিতে শুরু করেন। প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে তৃতীয়বারের চেষ্টায় সাপটি আস্তে আস্তে নড়তে শুরু করে, যা তাদভির প্রচেষ্টার সাফল্যের প্রমাণ দেয়। সাপটি বাঁচতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পায়।
এই ধরনের ঘটনায় সিপিআর সাধারণত মানুষের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এখানে একটি সাপের জীবন বাঁচাতে এটি সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়। যশ তাদভি বলেন, “আমি আগেও বিভিন্ন প্রাণী উদ্ধার করেছি, কিন্তু সিপিআর এর মাধ্যমে একটি সাপের জীবন বাঁচানোর অভিজ্ঞতা এই প্রথম।”
সাপটির অবস্থা এবং পুনরুদ্ধার:
সাপটি চেকার্ড কিলব্যাক, যা একটি নিরীহ এবং বিষমুক্ত প্রজাতির সাপ। এটি সাধারণত জলাশয়ের আশপাশে দেখা যায় এবং মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়। যশ তাদভির এই প্রচেষ্টার পর সাপটি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের উদ্যোগকে উৎসাহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, এই ধরনের ঘটনাগুলি জনসাধারণের মধ্যে বন্যপ্রাণী রক্ষার প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। সাপ, বিশেষ করে নিরীহ প্রজাতিরা, প্রায়শই ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়। তাদভির এই উদ্যোগে অনেকের কাছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পর এটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। একাধিক ব্যবহারকারী তাদভির মানবতার প্রতি বিশ্বাস এবং বন্যপ্রাণীর প্রতি তার ভালবাসার প্রশংসা করেন। একজন মন্তব্য করেন, “মানবতার প্রতি বিশ্বাস পুনরুদ্ধার হলো।” অন্য একজন বলেন, “এমন উদ্যোগগুলো আমাদের বন্যপ্রাণীর প্রতি আমাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।”
এছাড়াও, পড়ুন : গার্ডেন ওভেনের বাজারের আকার 9.60% এর CAGR-এ বাড়ছে, এই প্রতিবেদনটি 2024-2030 এর প্রকার, বিভাজন, বৃদ্ধি এবং পূর্বাভাস দ্বারা বিশ্লেষণ কভার করে
বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারীদের ভূমিকা:
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বন্যপ্রাণী উদ্ধার কর্মীরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে রক্ষা করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। অনেক সময় সাপ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীকে মানুষের আক্রমণের শিকার হতে হয়। কিন্তু বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারীদের এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে।
তাদভির এই প্রচেষ্টা শুধু একটি প্রাণীকে বাঁচানো নয়, এটি একটি উদাহরণ যে, আমাদের চারপাশের পরিবেশ ও জীবজগৎ কতটা মূল্যবান এবং আমরা কীভাবে তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে পারি।