দিল্লি স্কুল বিস্ফোরণ: রহস্যজনক 'সাদা গুঁড়ো' এবং 'বার্তা' তদন্ত করছে সংস্থাগুলি

দিল্লি স্কুল বিস্ফোরণ: রহস্যজনক ‘সাদা গুঁড়ো’ এবং ‘বার্তা’ তদন্ত করছে সংস্থাগুলি

top news

রবিবার সকালে দিল্লির রোহিণী এলাকায় অবস্থিত সিআরপিএফ স্কুলের একটি অংশে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যা দিল্লি শহরকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিস্ফোরণটি ‘নিম্নশক্তি’ বিস্ফোরক দিয়ে ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। দিল্লি পুলিশ সন্দেহ করছে যে অপরাধীরা একটি ‘ক্রুড বোমা’ ব্যবহার করে স্কুলের দেয়ালে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র বার্তা পৌঁছানোর উদ্দেশ্য ছিল।

তদন্তের অগ্রগতি

জাতীয় নিরাপত্তা গার্ড (এনএসজি), কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) এবং ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল) থেকে বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন এবং নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এনএসজি কমান্ডোরা বিস্ফোরণের পরে স্কুলের চারপাশে তল্লাশি অভিযান চালায়। বিস্ফোরণটি এমন একটি সময় ঘটেছে যখন স্কুল প্রাঙ্গণে কোনও বড় সমাবেশ ছিল না, যা তদন্তকারীদের মতে বড় ক্ষতির উদ্দেশ্য নয়, বরং আতঙ্ক বা বার্তা পৌঁছানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

এক পুলিশ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ANI জানিয়েছে, “দেয়ালের পাশে বিস্ফোরণের ধরন এবং সকালের সময়সূচি দেখে মনে হচ্ছে যে মূল উদ্দেশ্য বড় কোনো ক্ষতি করা ছিল না, বরং একটি বার্তা পাঠানো।”

সাদা গুঁড়ো উদ্ধার

তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিস্ফোরণের স্থান থেকে সাদা রঙের একটি গুঁড়ো উদ্ধার করেছে, যা বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা পিটিআইকে জানিয়েছেন, “সাদা গুঁড়োটি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং ক্লোরাইডের মিশ্রণ হতে পারে। বিস্ফোরণের পরে রাসায়নিকের গন্ধ পাওয়া গেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশ কর্মকর্তারাও অনুভব করেছেন। আমাদের দল পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে।”

তদন্তকারী দলের আরও একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে বিস্ফোরণের পিছনে একটি ক্রুড বোমা থাকতে পারে। “এটি কোনো ধরনের বিস্ফোরক নাকি অন্য কিছু তা সম্পূর্ণ পরীক্ষা করার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। আমরা সন্দেহ করছি যে ক্রুড বোমার মাধ্যমেই বিস্ফোরণ ঘটেছে,” ওই কর্মকর্তা বলেন।

সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং তদন্ত

বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি মিলিতভাবে তদন্ত করছে। বিস্ফোরণের পেছনে কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে তা নিয়ে পুলিশের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছে, তবে তাদের ধারণা এই বিস্ফোরণটি আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ছিল এবং কোনও বড় ধ্বংস সাধনের উদ্দেশ্য ছিল না।

পুলিশ সূত্র আরও জানিয়েছে যে, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত প্রমাণগুলি ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে এবং সেগুলি বিশ্লেষণ করে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ নির্ধারণ করা হবে। স্কুল চত্বরের আশেপাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে, যা তদন্তে সহায়ক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়াও, পড়ুন : গ্লোবাল ভিডিও ডিসপ্লে কন্ট্রোলার বাজারের আকার 2023 সালে USD 2.70 বিলিয়ন ছিল, এই প্রতিবেদনটি বাজারের বৃদ্ধি, প্রবণতা, সুযোগ এবং 2024-2030 পূর্বাভাস কভার করে


এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া

এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে এই বিস্ফোরণের কারণে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আশেপাশের এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করেছে যে, কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তির গতিবিধি দেখলে তারা যেন অবিলম্বে পুলিশকে জানায়। বিস্ফোরণের পর সিআরপিএফ স্কুলের কর্তৃপক্ষ স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করেছে এবং অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেছে যে তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রাথমিক তদন্তের ফলাফল

তদন্তকারী সংস্থাগুলি মনে করছে যে বিস্ফোরণটি একটি পরিকল্পিত হামলা ছিল, যদিও এটি একটি নিম্ন-শক্তি বিস্ফোরক ছিল। তদন্তকারীরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ঘটনার পেছনের সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রেফতারি বা দায়ীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়নি।

সিআরপিএফ স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, বিস্ফোরণের ঘটনাটি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের আশ্বস্ত করছে যে, স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এই ঘটনাটি নিয়ে দিল্লি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি সম্মিলিতভাবে কাজ করছে এবং তারা আশা করছে, খুব শীঘ্রই ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং দোষীদের চিহ্নিত করা যাবে।

সমাপ্তি

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ এবং তদন্তের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।