মঙ্গলবার রাতে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দীপাবলি উৎসব চলাকালীন এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, এই উত্তেজনা সেই সময় তৈরি হয় যখন দুইটি গ্রুপ একত্রে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের পর জামিয়া ক্যাম্পাসের বাইরেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে কিছু শিক্ষার্থী ‘প্যালেস্টাইন জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলে দীপাবলি উৎসবের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। তবে এই ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি HT News।
জানা গেছে, এই সংঘর্ষটি “অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ” (এবিভিপি) কর্তৃক পরিচালিত বার্ষিক দীপাবলি উৎসব অনুষ্ঠানের সময় ঘটে, যা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ছাত্র সংগঠন। এবিভিপির সদস্যরা জামিয়ায় সম্প্রতি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলি পরিচালনা করতে আগ্রহী হয়েছে এবং এই উৎসবও তাদের উদ্যোগের অংশ ছিল।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, সংঘর্ষটি শুরু হয় যখন একপক্ষ দীপাবলি উদযাপন করছে, আর অপরপক্ষ তাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরতে চায়। এই ধরনের ঘটনাগুলি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নতুন নয়, যেখানে প্রায়ই রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
একাধিক ছাত্র সংগঠন জামিয়া ক্যাম্পাসে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং তাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ প্রায়শই সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ঘটনার পর পুলিশ ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন থেকে অভিযোগ এসেছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ধরনের সহিংসতা সম্পর্কে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে বজায় রাখা উচিত, যেখানে শিক্ষার পরিবেশ অটুট থাকবে এবং সকলের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে।
দীপাবলি উৎসবের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের মনোযোগ আকর্ষিত হয়েছে। তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও, পড়ুন : TVS Thyristor বাজারের আকার 10.90% এর CAGR-এ বাড়ছে, এই প্রতিবেদনটি 2024-2030 টাইপ, বিভাজন, বৃদ্ধি এবং পূর্বাভাস দ্বারা বিশ্লেষণ কভার করে
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে, যা শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক শিক্ষার্থী মনে করেন যে এ ধরনের সহিংসতা শুধু তাদের শিক্ষা জীবনকেই ক্ষতি করছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকেও ক্ষুণ্ণ করছে।
জানা গেছে, সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশিরভাগ সময়ই কার্যকর ছিল না। কিছু শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে, যা এই ধরনের অশান্তির কারণ হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের উচিত একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া।
দীপাবলি উৎসবের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পরে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নতুন করে সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে, যদি দ্রুত সমাধান না হয়।
এখন পর্যন্ত এই সংঘর্ষে কোনো গুরুতর আহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতি এখনও অস্থির রয়েছে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে পড়ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। কিছু শিক্ষার্থী এবং সমর্থকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন।
এখন দেখার বিষয় হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসন এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে কিভাবে কাজ করে।