ইসরায়েল সিরিয়ায় একটি ‘সার্জিকাল’ অঞ্চল গঠন করতে চায়, বলেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।

top news

**ইসরায়েল সিরিয়ায় একটি ‘সার্জিকাল’ অঞ্চল গঠন করতে চায়, বলেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী**

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্প্রতি একটি ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে একটি ‘সার্জিকাল’ অঞ্চল গঠন করতে আগ্রহী। এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার আলেপ্পো এবং দামেস্ক শহরের আশেপাশের বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা পরিচালনা করেছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের উদ্দেশ্য হলো সেখানকার ইরানী এবং হিজবুল্লাহ সামরিক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করা।

ইতিহাসের পটভূমিতে ফিরে গেলেই দেখা যায়, সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্ক চিরকালই উত্তেজনাপূর্ণ। ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সিরিয়া সবসময়ই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এর পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধ, যেমন ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধ ও ১৯৭৩ সালের যুমক যুদ্ধ, দুই দেশের মধ্যে বিরোধকে আরও তীব্র করে। ঐতিহাসিকভাবে সৌদি আরবের মতো অন্যান্য আরব দেশগুলির সঙ্গে মোহভঙ্গ হয়েছে ইসরায়েলের, কিন্তু সিরিয়া সবসময়ই তার প্রতিপক্ষ হিসেবে থেকে গেছে।

বেশ কিছু বছর ধরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের প্রভাবে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামরিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ইসরায়েল এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিরিয়ার সে অংশে হামলা চালাচ্ছে যা ইরান এবং হিজবুল্লাহর দখলে রয়েছে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সু্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা সিরিয়ার আকাশসীমায় নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে আক্রমণ চালিয়ে যাবে, যতক্ষণ না বেইজিং ও তেহরানের প্রভাব সীমিত হয়।

সাম্প্রতিক কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ইসরায়েলি বাহিনী বর্তমানে সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলোতে অবস্থিত বেশ কিছু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে এবং সেখান থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্রাদি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এই সামরিক পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ব্ল্যাকমেইলের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসাবে কাজ করছে, যা সিরিয়ার আধিকারিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

কিভাবে এই সমস্ত কার্যক্রম সিরীয়া-ইসরায়েল সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে তা এখনও একটি গোপনীয় প্রশ্ন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সরাসরি উদ্ধৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে তারা সিরিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান, কিন্তু এর ফলে সামনের দিনে নতুন সংঘাতের উন্মেষ ঘটতে পারে।

এই ধরনের পদক্ষেপগুলো রাজনৈতিক মহলে একটি নতুন মাত্রা সংযোজন করছে যা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও সামরিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করবে। আন্তর্জাতিক স্তরে এটি একটি কূটনৈতিক সংকটের কারণ ঘটাতে পারে, যেখানে বিশ্ব শক্তিগুলি নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

অতীতের শিক্ষায় ফিরে দেখা যায়, বৃহত্তর রাজনৈতিক ইস্যু, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দূরদর্শী বিশ্লেষণে এই পরিস্থিতির সমাধান হবে। তবে এটি নিশ্চিত যে, মধ্যপ্রাচ্যের এই জটিল ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে।