হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব নবরাত্রি, ৯ দিনব্যাপী আয়োজিত হয়ে থাকে এবং এই সময়ের মধ্যে দেবী দুর্গার নয়টি রূপের পূজা করা হয়। নবরাত্রি এই বছর শুরু হয়েছে ৩ অক্টোবর এবং চলবে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট দেবীর পূজা করা হয়, এবং পঞ্চম দিনে পূজিত হন মা স্কন্দমাতা।
মা স্কন্দমাতা হলেন দেবী দুর্গার পঞ্চম রূপ। “স্কন্দ” শব্দটি দেবতা কার্তিকেয় বা মুরুগানকে বোঝায় এবং “মাতা” অর্থাৎ মা। মা স্কন্দমাতা এক রাগী সিংহের উপর আরোহন করেন এবং তাঁর কোলে রয়েছেন শিশু মুরুগান। মুরুগানকেও কার্তিকেয় নামে পরিচিত করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে মা স্কন্দমাতা তাঁর ভক্তদের ধন, মোক্ষ, সমৃদ্ধি এবং শক্তি প্রদান করেন।
মা স্কন্দমাতার পূজা: দিনটির তাৎপর্য
পঞ্চম দিনে, ভক্তরা মা স্কন্দমাতার পূজা করেন যাতে তিনি তাদের উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে, মা স্কন্দমাতা পূজার মাধ্যমে ভক্তদের মুক্তি, সম্পদ এবং সুখ প্রদান করেন। তিনি ভক্তদের সংকল্প, ধৈর্য, এবং পরিশুদ্ধ আত্মাকে পরিতৃপ্ত করেন।
হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, ভক্তরা যদি মা স্কন্দমাতার পূজায় নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিবেদিত করেন, তারা তখনই দেবীর কৃপা লাভ করতে পারেন। দৈহিক বা জাগতিক আকর্ষণ এবং চিন্তাধারার বাইরে এসে একাগ্রচিত্তে পূজা করলে দেবী ভক্তদের আশীর্বাদ দেন বলে বিশ্বাস।
মা স্কন্দমাতার পূজার পদ্ধতি
মা স্কন্দমাতার পূজা করার সময় ভক্তরা নির্দিষ্ট কিছু বিধি অনুসরণ করে থাকেন। ভোরবেলা স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরে মা স্কন্দমাতার মূর্তি বা প্রতিমার সামনে বসে পূজা শুরু করা হয়। এরপর ধুপ-দীপ জ্বালিয়ে, ফুল এবং নৈবেদ্য (প্রসাদ) নিবেদন করা হয়।
পূজার সময়ে মা স্কন্দমাতার স্তব বা মন্ত্র পাঠ করা হয়, যাতে ভক্তরা তাদের কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং মা তাঁদের শক্তি ও আর্শীবাদ দেন। মা স্কন্দমাতার পূজার মন্ত্র হল:
“ॐ देवी स्कन्दमातायै नमः”
এই মন্ত্র জপ করার মাধ্যমে পূজারিরা মা স্কন্দমাতার পূজা সম্পন্ন করেন। মন্ত্রজপের সময় মনকে শান্ত করে একাগ্রচিত্তে মা স্কন্দমাতার চরণে নিবেদন করতে হয়।
শুভ মুহূর্ত ও শুভ রং
পঞ্চম দিনের পূজার শুভ মুহূর্ত সূর্যোদয়ের পর থেকে শুরু হয় এবং তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ভক্তরা এই সময়ে মা স্কন্দমাতার আশীর্বাদ পেতে পূজা করেন। ২০২৪ সালের নবরাত্রির পঞ্চম দিনে পূজার শুভ সময় হিসেবে বেলা ৮:৩৫ থেকে ১১:৫০ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়েছে। এই সময়ে পূজা করা সবচেয়ে শুভ বলে মনে করা হয়।
পঞ্চম দিনের শুভ রং হিসেবে সবুজ ধরা হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, এই রং মা স্কন্দমাতার শক্তির প্রতীক এবং পূজার সময় সবুজ পোশাক পরিধান করলে দেবীর কৃপা লাভ করা সম্ভব।
এছাড়াও, পড়ুন : বোটুলিনাম টক্সিন বাজারের আকার 10% এর CAGR-এ বাড়ছে, এই প্রতিবেদনটি 2024-2030 টাইপ, বিভাজন, বৃদ্ধি এবং পূর্বাভাস দ্বারা বিশ্লেষণ কভার করে
পঞ্চম দিনের দেবী: মা স্কন্দমাতা
মা স্কন্দমাতার পূজা করার সময়ে ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি তাদের জীবনে সাফল্য, শারীরিক ও মানসিক শান্তি, এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, মা স্কন্দমাতা ভক্তদের অসুবিধা থেকে মুক্তি দেন এবং তাদের জীবনে শান্তি ও মঙ্গলের বৃষ্টি ঘটান।
মা স্কন্দমাতা তার ভক্তদের ভক্তি ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে তাঁদেরকে আশীর্বাদ করেন। এই পঞ্চম দিনটি ভক্তদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং তারা এই দিনে মা স্কন্দমাতার পূজা করেন যাতে তাঁদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়।
পঞ্চম দিনের পূজার বিধি
নবরাত্রির পঞ্চম দিনে মা স্কন্দমাতার পূজার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিধি পালন করা হয়। সাধারণত, সকালে ভক্তরা স্নান সেরে শুদ্ধ পোশাক পরেন এবং মা স্কন্দমাতার মূর্তির সামনে বসেন। এরপর ধুপ, প্রদীপ জ্বালিয়ে মন্ত্র জপ করা হয়।
পূজার প্রধান উপাচারগুলির মধ্যে ফুল, ধূপ, প্রদীপ, ফল এবং প্রসাদ রাখা হয়। পাশাপাশি মন্ত্র জপের মাধ্যমে ভক্তরা মা স্কন্দমাতার পূজার সম্পূর্ণ করেন। ভক্তরা প্রার্থনা করেন যাতে তাঁদের জীবনে মা স্কন্দমাতার কৃপা লাভ হয় এবং তাঁদের সমস্ত কষ্ট ও দুঃখ দূর হয়।
মা স্কন্দমাতার প্রতীক
মা স্কন্দমাতা কে একটি সিংহের উপর আরোহিত অবস্থায় চিত্রিত করা হয় এবং তাঁর কোলে শিশু মুরুগান থাকে। এই দেবীকে পাঁচটি হাত সহ চিত্রিত করা হয়, যা শক্তি ও সাহসের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
মা স্কন্দমাতার পূজা করার সময় ভক্তরা নিজেদের সমস্ত মনোযোগ দেবীর উপর কেন্দ্রীভূত করে এবং প্রার্থনা করেন যাতে তাঁদের জীবনে শক্তি, মঙ্গল এবং সমৃদ্ধি আসে।