বলিউড তারকা সালমান খানকে হুমকি, গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ১১০ একর জমির দাবি: বিতর্কে বিষ্ণোই পরিবারের সদস্যের মন্তব্য

top news

আবারো বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলিউড তারকা সালমান খানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার। এই পরিস্থিতিতে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের এক আত্মীয় এবার প্রকাশ্যে এসেছেন এবং পরিবারের পক্ষ থেকে বিষ্ণোইয়ের সম্পত্তির দাবি এবং সালমান খানকে হুমকির বিষয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। এই ঘটনা ইতিমধ্যে ভারতের সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছে।

বিষ্ণোই পরিবারের দাবি ও সম্পত্তির বিষয়

লরেন্স বিষ্ণোইয়ের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “লরেন্সের ১১০ একর জমি রয়েছে, এবং সে তার নিজস্ব জীবনযাপনে সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী।” তিনি আরও দাবি করেন যে বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে, সেগুলি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। বিষ্ণোইয়ের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মতে, লরেন্স এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার নিজস্ব সমাজে উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত এবং তার কোনো অপরাধমূলক কাজের সাথে সরাসরি সম্পর্ক নেই।

সালমান খানকে হুমকি: ঘটনা ও তদন্ত

প্রায়ই শোনা যায় যে, বলিউড সুপারস্টার সালমান খানকে বিভিন্ন সময়ে গ্যাংস্টারদের কাছ থেকে হুমকি দেওয়া হয়। এমনটাই ঘটেছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ক্ষেত্রেও। বিষ্ণোই গ্যাং-এর পক্ষ থেকে সালমানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বেশ চর্চা চলছে। বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের লোকজনের অভিযোগ, সালমানের বিরুদ্ধে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অবমাননার অভিযোগ ছিল, যা নিয়ে বিষ্ণোই গ্যাং ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

মুম্বাই পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই এই হুমকির ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। সালমান খানের বাড়ি এবং শ্যুটিং লোকেশনে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। তবে পুলিশের মতে, এই হুমকি শুধুমাত্র একটি ‘দেখানো’ উদ্দেশ্যে এবং গ্যাংস্টারদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতার ফলাফল হতে পারে।

বিষ্ণোইয়ের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড: আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি

লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম ভারতে একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। মাদক চক্র, অস্ত্র ব্যবসা এবং বিভিন্ন ধরনের আন্ডারওয়ার্ল্ড কার্যকলাপের সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, বিষ্ণোইয়ের গ্যাং ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে পরিচালিত হচ্ছে এবং দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

এফআইআর অনুযায়ী, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নেতৃত্বাধীন গ্যাং অনেক বছর ধরে ভারতীয় আন্ডারওয়ার্ল্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে তার যোগসাজশ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিষ্ণোইকে তার গ্যাং-এর কার্যকলাপের জন্য বারবার আইনের মুখোমুখি হতে হয়েছে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।

বলিউড ও আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক: পুরনো বিতর্ক

বলিউড এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক বহু বছর ধরে ভারতীয় মিডিয়ার একটি আলোচিত বিষয়। সত্তরের দশক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বলিউড তারকাদের আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। সালমান খানও এই বিতর্কের বাইরে নন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাং থেকে হুমকি এসেছে, যা নিয়ে আলোচনা থেমে থাকেনি। তবে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের হুমকি নিয়ে পরিস্থিতি ভিন্ন, কারণ এতে ধর্মীয় এবং সামাজিক কারণ জড়িয়ে রয়েছে।

এছাড়াও, পড়ুন : সেফটি টু হ্যান্ড কন্ট্রোল সুইচ বাজারের আকার 10.20% এর CAGR-এ বাড়ছে, এই প্রতিবেদনটি 2024-2030 এর ধরন, বিভাজন, বৃদ্ধি এবং পূর্বাভাস দ্বারা বিশ্লেষণ কভার করে

পুলিশের পদক্ষেপ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

মুম্বাই পুলিশ এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলি এই হুমকি এবং বিষ্ণোইয়ের অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের অবস্থান শনাক্ত করার জন্য বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করতে এবং গ্যাংয়ের কার্যকলাপ বন্ধ করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এদিকে, সালমান খান এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে, এবং তাদের প্রতিদিনের চলাফেরার উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক প্রভাব

এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল লরেন্স বিষ্ণোইয়ের পক্ষ নিয়ে বলছেন যে, তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। অন্যদিকে, অনেকেই বলছেন যে গ্যাংস্টারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সমাজে এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।

বিষ্ণোই সম্প্রদায়ও তাদের ধর্মীয় অনুভূতির অবমাননা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং বলিউড তারকাদের প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং সরকারকে আরও সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।

উপসংহার

লরেন্স বিষ্ণোই এবং সালমান খানের মধ্যকার এই বিতর্ক এবং গ্যাংস্টারদের দ্বারা বলিউড তারকাদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এই হুমকির পেছনে কী আসল কারণ তা এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার নয়, তবে এর ফলে বলিউড এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।