মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখা রবিবার নাভি মুম্বাইতে বাবা সিদ্দিকি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত একজন স্ক্র্যাপ ডিলারকে আটক করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি, রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা ভগবৎ সিং ওম সিং (৩২), অভিযোগ রয়েছে যে তিনি এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন।
মুম্বাই পুলিশের তদন্তের সূত্রে জানা গেছে, ১২ অক্টোবর, ২০২৪-এ প্রভাবশালী এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে তার ছেলে জিশান সিদ্দিকির অফিসের সামনে তিনজন হামলাকারী গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার তদন্ত চলাকালীন, পুলিশ মোট ১০ জন অভিযুক্তকে আটক করেছে, যার মধ্যে সর্বশেষ অভিযুক্ত ভগবৎ সিং ওম সিং।
হত্যাকাণ্ডের পিছনের চক্রান্ত
অভিযুক্ত ভগবৎ সিং ওম সিং নাভি মুম্বাইতে বসবাস করতেন এবং স্ক্র্যাপ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুলিশের দাবী, তিনি হত্যার জন্য মূল অপরাধীদের অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। এই মামলায় তাকে স্থানীয় আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে আদালত ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার আদেশ দেয়।
এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা যুক্ত রয়েছে তাদের মধ্যে গুরমেইল বলজিত সিং (২৩) এবং ধর্মরাজ রাজেশ কাশ্যপ (১৯) নামে দুই শুটারকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, যা মামলাটি আরও স্পষ্ট করেছে।
মূল হামলাকারী এবং অন্যান্য অভিযুক্ত
মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখার মতে, এই হত্যা পরিকল্পনার মূল শুটার শিবকুমার গৌতম এখনো পলাতক। এছাড়াও আরও দু’জন ব্যক্তি এই ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে, যারা এখনও ধরা পড়েনি। শিবকুমার গৌতমের খোঁজে পুলিশের বিভিন্ন টিম বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছে। অভিযুক্তরা কোথায় পালিয়ে থাকতে পারে, সে সম্পর্কে একাধিক সূত্রে তথ্য এসেছে, যা তদন্তে সহায়তা করছে।
গ্যাং এবং হত্যার কারণ
এই হত্যার সঙ্গে যুক্ত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং দায় স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জানা গেছে, গ্যাং-এর আদেশেই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদেরও খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের তদন্ত দল ক্রমাগত তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
এছাড়াও, পড়ুন : গ্লোবাল টগল সুইচ মার্কেটের আকার 2023 সালে USD 3.00 বিলিয়ন ছিল, এই প্রতিবেদনটি বাজারের বৃদ্ধি, প্রবণতা, সুযোগ এবং পূর্বাভাস 2024-2030 কভার করে
হত্যাকাণ্ডের দিন ঘটনাবলি
১২ অক্টোবরের সেই দিনে বাবা সিদ্দিকি তার ছেলের অফিস থেকে বের হওয়ার সময়, আচমকা তিনজন হামলাকারী তার উপর গুলি চালায়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলাকারীরা খুব দ্রুত কাজ সম্পন্ন করে এবং পালিয়ে যায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত সিদ্দিকিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, তিনি বাঁচতে পারেননি।
এই হত্যাকাণ্ডের পর, রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বাবা সিদ্দিকি মুম্বাইয়ের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এবং তার সাথে বলিউডের সেলিব্রিটিদেরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ঘটনাটি কেবল রাজনৈতিক নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
তদন্তের অগ্রগতি
মুম্বাই পুলিশের অপরাধ শাখা এই ঘটনার তদন্তে বড়সড় অগ্রগতি করেছে। এ পর্যন্ত ১০ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তবে মূল শুটার এবং তার সহযোগীরা এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। পুলিশ এই মামলায় বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত করছে, এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান থেকে প্রাপ্ত তথ্যও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মুম্বাই পুলিশের একটি বিশেষ দল রাজস্থানের উদয়পুরে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে পলাতক অভিযুক্তদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পুলিশ প্রযুক্তিগত নজরদারি বাড়ানোর মাধ্যমে অভিযুক্তদের খোঁজার চেষ্টা করছে।
বাবা সিদ্দিকি হত্যা মামলা এখন মুম্বাইয়ের অন্যতম আলোচিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং পুরো ঘটনাটি রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের নজরে এসেছে।